লালমনিরহাটের পাটগ্রাম মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ফাতেমা প্রি ক্যাডেট গার্টেন এর প্রশাসক চাল কল মালিক সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলীকে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের একমাত্র এজাহার নামীয় গ্রেফতারকৃত মূল আসামি মোঃ নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবু (২৭) কে পেইড সোর্স নিয়োগ করে ভারত থেকে বাংলাদেশে এনে গ্রেফতার করেছে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানা পুলিশ।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে হত্যাকাণ্ডের বিষয় নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন লালমনিরহাট পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
তিনি জানান, গত ২০ জানুয়ারি রাত ৯টার সময় নিজ বাসার সামনে পাকা রাস্তায় পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামি মোঃ নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবু ও অজ্ঞাত নামা আরো আসামিসহ এম ওয়াজেদ আলীর পথরোধ করে ধারালো ছুরি দিয়ে গুরুতরভাবে জখম করে। এ সময় তার আত্মচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামি মোঃ নাহিদুজ্জামান বাবু পশ্চিম দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।পরে স্থানীয় লোকজন আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলীকে দ্রুত অটো রিক্সাযোগে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাহাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় নিহতের ছেলে রিফাত হাসান বাদী হয়ে পাটগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলার ঘটনার মূল রহস্য ও জড়িত আসামীদেরকে গ্রেফতারের জন্য ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে মোঃ নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবুর ঘনিষ্ঠ বাল্যবন্ধু আলমগীর ওরফে আব্দুল্লাহ (২৭) কে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করে। তাকে ৩দিনের রিমান্ড নিয়ে পুলিশ ব্যাপক জিজ্ঞাসা বাদ করে। এরপর জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এর দিকনির্দেশনায় দীর্ঘ ৯দিন ধরে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে অনুসন্ধান চালিয়ে আসামি মোঃ নাহিদুজ্জামান বাবুর অবস্থান ভারতের কুচবিহারে জানা যায়।
আসামী বাবুর অবস্থান শনাক্ত করে। পুলিশ কৌশলে পেইড সোর্স নিয়োগ করে ভারত কুচবিহার হতে আঙ্গুরপোতা হয়ে দহগ্রামে এলে নিয়ে পাটগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওমর ফারুক এর নেতৃত্বে ১০সদস্যের একটি পুলিশ টিম বাবুকে গ্রেফতার করে।গ্রেফতারকৃত আসামী ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। লালমনিরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ বেলাল হোসাইন এর কাছে বাবু ১৬৪ জবানবন্দিতে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন।
এ প্রেস ব্রিফিংয়ে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আতিকুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) ফরহাদ ইমরুল কায়েস, পাটগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওমর ফারুকসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।